স্টাফ রিপোর্টার ঃ আনন্দগণ পরিবেশে বর্ণিল সাজে বেগমগঞ্জবাসী ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়ে বরণ করল তাদেও দুই প্রিয়মুখ সচিব ড. আবু ইউছুফ ও ইউএনও আরিফুর রহমানকে।
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের ইতিহাসে ১৩ সেপ্টেম্বর শনিবার ছিল একটি স্মরণীয়দিন। সকাল থেকেই ছড়িয়ে পড়েছিল উৎসবের আমেজ। উপজেলা মুক্ত মঞ্চে ভিড় জমিয়েছিলেন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ, জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী, সমাজকর্মী, এমনকি দূর-দূরান্তের সাধারণ মানুষও। কারণ একটাই- তাঁদের আপনজন, কৃতি সন্তান ড. মোহাম্মদ আবু ইউছুফ হয়েছেন বাংলাদেশ সরকারের সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব। আর যিনি সম্প্রতি বন্যা ও জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ থেকে বেগমগঞ্জবাসীকে মুক্তির উদ্যোগ নিয়েছেন- উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আরিফুর রহমান- তাঁকেও সংবর্ধনা জানাতে ছুটে এসেছেন সকলে।
অনুষ্ঠানটি যেন রূপ নিয়েছিল এক মহামিলনমেলায়। সভাপতি এস এম সাহাব উদ্দিন মঞ্চে বসেই বললেন, ড. আবু ইউসুফ আমাদের গৌরব। আর ইউএনও আরিফুর রহমানের কার্যকর পদক্ষেপে বেগমগঞ্জবাসী জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পেয়েছে।
তাঁর কথার সঙ্গে সঙ্গে চারদিক জুড়ে বেজে উঠল হাততালি।
বক্তৃতার আনুষ্ঠানিকতা পেরিয়ে যখন ড. আবু ইউছুফ মাইকে দাঁড়ালেন, তখন পুরো প্রাঙ্গণ নিস্তব্ধ হয়ে গেল। তিনি বললেন- বেগমগঞ্জের মানুষের ভালোবাসা আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থেকে দেশের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কল্যাণে কাজ করাই হবে আমার অঙ্গীকার।
শব্দগুলো যেন বাতাসে ভেসে গিয়ে প্রত্যেকের হৃদয়ে জায়গা করে নিল।
অন্যদিকে ইউএনও মো. আরিফুর রহমানও জনতার প্রত্যাশার প্রতিধ্বনি শোনালেন। তিনি জানালেন- বেগমগঞ্জের উন্নয়ন ও জনসেবার কাজে জনগণের সহযোগিতা সবসময় পাশে পেয়েছি। জলাবদ্ধতা নিরসনে যে উদ্যোগ নিয়েছি, তা আরও এগিয়ে নিতে চাই।
অনুষ্ঠানে সরকারি কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা ও ব্যবসায়ী সমাজের প্রতিনিধিরা একে একে বক্তব্য রাখেন। কেউ বলেন নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়নের কথা, কেউ তোলেন বিমানবন্দর নির্মাণের দাবি। আবার কেউ প্রস্তাব করেন বøাড ব্যাংক স্থাপন কিংবা মাদক প্রতিরোধ কমিটি গঠনের প্রয়োজনীয়তার কথা। সব মিলিয়ে সংবর্ধনার মঞ্চটি হয়ে উঠেছিল বেগমগঞ্জের উন্নয়ন ভাবনার উর্বর ক্ষেত্র।
মুক্ত মঞ্চের চারপাশে দাঁড়িয়ে থাকা সাধারণ মানুষের মুখে ছিল এক ধরনের স্বস্তি ও আশাবাদ। তাঁদের বিশ্বাস- যখন যোগ্য ও আন্তরিক মানুষ নেতৃত্বে আসেন, তখন সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন অনিবার্য। সচিব ড. আবু ইউছুফ ও ইউএনও আরিফুর রহমানকে দেওয়া এ সংবর্ধনা তাই শুধু আনুষ্ঠানিকতা ছিল না, ছিল কৃতজ্ঞতা ও আশার এক মহামুহূর্ত।
স্থানীয় এক প্রবীণ শিক্ষক বলছিলেন, “আমরা শুধু পদোন্নতি পাওয়া মানুষকে সম্মান জানাইনি, বরং আমাদের সন্তানদের সামনে এক দৃষ্টান্ত রেখেছি- যোগ্যতা, সততা ও নিষ্ঠাই মানুষকে সম্মান এনে দেয়।
শেষ মুহূর্তে যখন অতিথিদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হচ্ছিল, তখন মনে হচ্ছিল- বেগমগঞ্জ যেন নিজের সন্তানদের বুকভরা ভালোবাসা দিয়ে বিদায় জানাচ্ছে তাঁদের কর্মক্ষেত্রে। আর সেই ভালোবাসা নিঃসন্দেহে তাঁদের আগামীর কাজে এক অটল প্রেরণা হয়ে থাকবে।
এ সময় বক্তব্য রাখেন, এনবিআর মেম্বার ও কর কমিশনার মোয়াজ্জম হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নাজমা বিনতে আমিন, বেগমগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দেওয়ান লিটন, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারী মাওলানা বোরহান উদ্দিন, বেগমগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহŸায়ক কামাক্ষ্যা চন্দ্র দাস, চৌমুহনী পৌর বিএনপির আহŸায়ক জহির উদ্দিন হারুন প্রমুখ।
You cannot copy content of this page